Cosmology in hadis
৩০৬৩। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি একশ বার এ দু’আটি পড়বেঃ আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই; বাদশাহী একমাত্র তারই, সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তাঁরই জন্য, আর তিনি সকল বস্তুর উপর সর্বশক্তিমান। তাহলে দশটি গোলাম আযাদ করার পরিমাণ সাওয়াব তার হবে। তার জন্য একশটি সাওয়াব লেখা হবে এবং আর একশটি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে। ঐদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান থেকে মাহফুজ থাকবে। কোন লোক তার চাইতে উত্তম সাওয়াবের কাজ করতে সক্ষম হবে না। তবে হ্যাঁ ঐ ব্যাক্তি সক্ষম হবে, যে এর চেয়ে ঐ দু‘আটির আমল অধিক পরিমাণ করবে।
৩০৬৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, একদা উমর (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট আসার অনুমতি চাইলেন। তখন তাঁর সঙ্গে কয়েকজন কুরায়শ মহিলা কথা বার্তা বলছিল। তারা খুব উচ্চস্বরে কথা বলছিল। এরপর যখন উমর (রাঃ) অনুমতি চাইলেন, তারা উঠে দ্রুত পর্দার আড়ালে চলে গেলেন। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে অনুমতি প্রদান করলেন। তখন তিনি মুচকি হাসছিলেন। তখন উমর (রাঃ) বললেন, ‘ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহ আপনাকে সর্বদা স্মীতহাস্যে রাখুন। ’ তিনি বললেন, আমার কাছে যে সব মহিলা ছিল তাদের ব্যাপারে আমি আশ্চার্যান্বিত হয়েছি। তারা যখনই তোমার কণ্ঠস্বর শুনতে পেল তখনই দ্রুত পর্দার আড়ালে চলে গেল। উমর (রাঃ) বললেন, ‘ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনাকেই তাদের অধিক ভয় করা উচিত ছিল। ’ এরপর তিনি মহিলাদের লক্ষ্য করে বললেন, হে আত্মশত্রু মহিলাগণ! তোমরা আমাকে ভয় করছ অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে ভয় করছ না? তারা জবাব দিল, হ্যাঁ, কারণ তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর চেয়ে অধিক কর্কশ ভাষী ও কঠোর হৃদয় ব্যাক্তি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘কসম ঐ সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তুমি যে পথে গমন কর শয়তান কখনো সেই পথে চলে না বরং সে তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথে চলে। ’
৩০৬৫। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন নিদ্রা থেকে উঠল এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু) করল তখন তার নাক তিনবার ঝেড়ে ফেলা উচিত, কেননা, শয়তান তার নাকের ছিদ্রে রাত যাপন করেছে। ’
৩০৬৬। কুতাইবা (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রাহমান (রহঃ)-কে বলেছেন, ‘আমি তোমাকে দেখেছি তুমি ছাগপেল ও মরুভূমি পছন্দ করছ। অতএব তুমি যখন তোমার ছাগপেল নিয়ে মরুভূমিতে অবস্থান করবে, সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হলে আযান দিবে, তখন তুমি উচ্চস্বরে আযান দিবে। কেননা, মুয়াজ্জ্বীনের কণ্ঠস্বর জ্বিন, মানুষ ও যে কোন বস্ত্ত শুনে, তারা কিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে। ’ আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আমি এ হাদীসটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি।
৩০৬৭। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে মিম্বারের উপর ভাষণ দান কালে বলতে শুনেছন, ‘সাপ মেরে ফেল। বিশেষ করে মেরে ফেল ঐ সাপ, যার মাথার উপর দু’টো রেখা আছে এবং লেজ কাটা সাপ। কেননা, এ দু’প্রকারে সাপ চোখের জ্যোতি নষ্ট করে দেয় ও গর্ভপাত ঘটায়। ’ আবদুল্লাহ (রহঃ) বললেন, একদিন আমি একটি সাপ মারার জন্য তার পেছনে ধাওয়া করছিলাম। এমন সময় আবূ লবাবা (রাঃ) আমাকে ডেকে বললেন, সাপটি মেরো না। তখন আমি বললাম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাপ মারার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তিনি বললেন, এরপরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সাপ ঘরে বাস করে যাকে ‘আওয়ামির’ বলা হয় এমন সাপ মারতে নিষেধ করেছেন।
আবদুর রাযযাক (রহঃ) মা‘মার (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, আমাকে দেখেছেনাবূ লুবাবা অথবা যায়দ ইবনু খাত্তাব (রাঃ) আর অনুসরণ করেছেন মা‘মার (রহঃ)-কে ইউনুস ইবনু উয়াইনা, ইসহাক কলবী ও যুবাইদী (রহঃ) এবং সালিহ, ইবনু আবূ হাফসা ও ইবনু মুজাম্মি‘ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, ‘আমাকে দেখেছেন আবূ লুবাবা ও যায়দ ইবনু খাত্তাব (রাঃ)। ’
৩০৬৮। ইসমাঈল (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সে সময় অতি নিকট যখন একজন মুসলিমের সর্বোত্তম সম্পদ হবে ছাগ-পাল। যা নিয়ে সে পাহাড়ের চুড়ায় এবং বৃষ্টির এলাকায় (তৃণভূমিতে) চলে যাবে; সে ফিতনা থেকে স্বীয় দ্বীন রক্ষার্থে পলায়ন করবে।
৩০৬৯। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কুফুরীর মূল পূবদিকে, গর্ব এবং অহংকার ঘোড়া এবং উটের মালিকদের মধ্যে এবং গ্রাম্য কৃষকদের মাঝে , আর শাস্তি ছাগপালের মালিকদের মাঝে। ’
৩০৭০। মূসা’দ্দাদ (রহঃ) উকবা ইবনু আমর আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাতের দ্বারা ইয়ামানের দিকে ইশারা করে বললেন, ঈমান এদিকে। দেখ কঠোরতা এবং অন্তরের কাঠিন্য ঐ সব কৃষকদের মধ্যে যারা উটের লেজের কাছ থেকে চিৎকার করেঃ যেখান থেকে শয়তানের শিং দু’টি উদয় হবে অর্থাৎ রাবীয়া ও মুযার গোত্রদ্বয়ের মধ্যে।
৩০৭১। কুতাইবা (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তোমরা মোরগের ডাক শুনবে তখন তোমরা আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ চেয়ে দু’আ কর। কেননা, এ মোরগ ফিরিশতাদের দেখে আর যখন গাধার আওয়াজ শুনবে তখন শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবে, কেননা, এ গাধাটি শয়তান দেখেছে। ’
৩০৭২। ইসহাক (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যখন রাতের আধার নেমে আসবে বা বলেছেন, যখন সন্ধ্যা হয়ে যাবে তখন তোমরা তোমাদের শিশুদেরকে (ঘরে) আটকিয়ে রাখবে। কেননা এ সময় শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে। আর যখন রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হয়ে যাবে তখন তাদেরকে ছেড়ে দিতে পার। তোমরা ঘরের দরজা বন্ধ করবে এবং আল্লাহর নাম স্মরণ কর। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। ইবনু জুরাইজ (রহঃ) বলেন, হাদীসটি আমর ইবনু দীনার (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ থেকে আতা (রহঃ)-এর অনুরূপ বর্ণণা করেছেন। তবে তিনি বলেন নি।
৩০৭৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, বনী ইসরাঈলদের একদল লোক নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। কেউ জাননা তাদের কি হল আর আমি তাদেরকে ইদুর বলেই মনে করি। কেননা তাদের সামনে যখন উটের দুধ রাখা হয়, তারা তা পান করে না, আর তাদের সামনে ছাগলের দুধ রাখা হয় তারা তা পান করে (আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন) আমি এ হাদীসটি কা‘বের নিকট বললাম, তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন? আপনি কি এটা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছেন?আমি বললাম, হ্যাঁ। তারপর তিনি কয়েকবার আমাকে একথাটি জিজ্ঞাসা করলেন। তখন আমি বললাম, আমি কি তাওরাত কিতাব পড়েছি?
৩০৭৪। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গিরগিট বা রক্তচোষা টিকটিকিকে নিকৃষ্টতম ফাসিক বলে অভিহিত করেছেন। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে একে হত্যা করার আদেশ দিতে শুনিনি। আর সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একে হত্যা করা আদেশ দিয়েছেন।
৩০৭৫। সা’দকা ইবনু ফাযল (রহঃ) সাঈদ ইবনু মূসা ইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মে শারীক (রাঃ) তাঁকে খবর দিয়েছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে গিরগিট বা রক্তচোষা জাতীয় টিকটিকি হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন।
৩০৭৬। উবায়দা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পিঠে দু’টি সাদা রেখা বিশিষ্ট সাপকে মেরে ফেল। কেননা এ জাতীয় সাপ দৃষ্টিশক্তিকে নষ্ট করে আর গর্ভপাত ঘটায়।
৩০৭৭। মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লেজ কাটা সাপকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন, আর বলেছেন, এ জাতীয় সাপ দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে এবং গর্ভপাত ঘটায়।
৩০৭৮। আমর ইবনু আলী (রহঃ) ইবনু আবূ মূলায়কা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) প্রথমে সাপ মেরে ফেরতেন। পরে মারতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাঁর একটি দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেন। তাতে তিন সাপের খোলস দেখতে পান। তখন তিনি বললেন, দেখ! কোথায় সাপ সাছে? লোকেরা দেখল (এবং তাঁকে জানাল) তিনি বললেন, একে মেরে ফেল। এ কারণে আমি সাপ মেরে ফেরতাম। এরপর আবূ লুবাবার সাথে আমার দেখা হল। তিনি আমাকে জানালেন , নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পিঠের উপর দু’টি রেখা বিশিষ্ট এবং লেজকাটা সাপ ব্যতীত অন্য কোন সাপকে তোমরা মেরা না। কেননা এগুলো গর্ভপাত ঘটায় এবং চোখের জ্যোতি নষ্ট করে দেয়। তাই এ জাতীয় সাপ মেরে ফেল।
৩০৭৯। মালিক ইবনু উসমঈল (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি সাপ মেরে ফেলতেন। এরপর আবূ লুবাবা তাঁকে একটি হাদীস শোনালেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে বসবাসকারী সাপ মারতে নিষেধ করেছেন। ফলে তিনি সাপ মারা বন্ধ করে দেন।
৩০৮০। মূসা দদাদ (রহঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পাঁচ প্রকার প্রাণী বেশী অনিষ্টকারী। এদেরকে হারাম শরীফেও হত্যা করা যায়। এগুলো হল বিচ্ছু, ইঁদুর, চিল, কাক এবং পাগলা কুকুর।
৩০৮১। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পাঁচ প্রকারের অনিষ্টকারী প্রাণী যাদেরকে কেউ ইহরাম অবস্থায়ও যদি মেরে ফেলে, তা হলে তার কোন গুনাহ নেই। এগুলো হল বিচ্ছু, ইঁদুর, পাগলা কুকুর, কাক এবং চিল।
৩০৮২। মূসা’দ্দাদ (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা পাত্রগুলো ডেকে রেখো, পান-পাত্রগুলো বন্ধ করে রেখো, ঘরে দরজাগুলো বন্ধ করে রেখো সাঝের বেলায় তোমাদের শিশুদেরকে ঘরে আটকিয়ে রেখো। কেননা এ সময় জ্বিনেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোন কিছুকে দ্রুত পাকড়াও করে। আর নিদ্রাকালে বাতিগুলো নিভিয়ে দিবে। কেননা অনেক সময় ছোট ছোট অনিষ্টকারী ইঁদুর প্রজ্বলিত সলতেযুক্ত বাতি টেনে নিয়ে যায় এবং গৃহবাসীকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ’ ইবনু জুরাইজ এবং হাবীব (রহঃ) আতা (রহঃ) থেকে ‘‘কেননা এ সময় জ্বিনেরা ছড়িয়ে পড়ে’’ এর পরিবর্তে ‘‘শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে’’ বর্ণনা করেছেন।
৩০৮৩। আবদা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে এক গুহায় ছিলাম। তখন সূরাটি অবতীর্ণ হয়। আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মুখ থেকে সূরাটি লিখে নিচ্ছিলাম। এমনি সময় একটি সাপ বেরিয়ে আসল তর গর্ত থেকে। আমরা তাকে মারার জন্য দৌড়ে যাই। কিন্তু সে আমাদের আগেই ভেগে গিয়ে গর্তে ঢুকে পড়ে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে তোমাদের অনিষ্ট থেকে যেমন রক্ষা পেয়েছে, তোমরাও তেমন তারানিষ্ট থেকে রক্ষা পেয়েছো। ইসরাঈর (রহঃ) আমাশ, ইবরাহীম, আলকামা (রহঃ)-ও আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। রাবী আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেছেন, আমরা সুরাটি তাঁর মুখ থেকে বের হবার সাথে সাথে মিখে নিচ্ছিলাম। আবূ আওয়ানা মুগীরা (রাঃ) থেকে অনুরূপই বর্ণনা করেছেন। আর হাফস, আবূ মুআবিয়া ও সুলাইমান ইবনু কারম, আ‘মাশ, ইব্রাহীম, আসওয়াদ (রহঃ)-ও আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে অনুরূপই বর্ণনা করেছেন।
৩০৮৪। নাসর ইবনু আলী (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একজন মহিলা একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে না- তাকে খাবার দিয়েছিল, না তাকে ছেড়ে দিয়েছিল, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত। আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রেও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।
৩০৮৫। ইসমাঈল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গণের মধ্যে কোন এক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাছের নীচে অবতরণ করেন। এরপর তাঁকে একটি পিপড়ায় কামড় দেয়। তিনি তাঁর প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সমন্ধে নির্দেশ দিলেন। এগুলো গাছের নীচ হতে বের করে দেওয়া হল। তারপর তিনি নির্দেশ দিলে পিপড়ার বাসা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হল। তখন আল্লাহ তাঁর প্রতি ওহী নাযিল করলেন, ‘তুমি একটি মাত্র পিপড়াকে কে কেন সাজা দিলে না?’
৩০৮৬। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) ‘উবাইদ ইবনু হুনায়ন থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কারো পানীয় দ্রব্যে মাছি পড়লে তাকে তাতে ডুবিয়ে দিবে। তারপর তাকে উঠিয়ে ফেলবে। কেননা তার এক ডানায় রোগ জীবানু থাকে আর অপরটিতে থাকে প্রতিষেধক।
৩৯৮৭। আল হাসান ইবনু সাববাহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘জনৈক ব্যাভিচারিণীকে (এ কারণে) ক্ষমা করে দেওয়া হয় যে, একদা একেকটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন দেখতে পেল কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। রাবী বলেন, পানির পিপাসায় তাকে মৃতপ্রায় করে দিয়েছিল। তখন ব্যাভিচারিণী মহিলাটি তার মোজা খুলে তাঁর উড়নার সাথে বাঁধল। তারপর সে (তা কূপে ছেড়ে দিয়ে) কূপ হতে পানি তুলে আনল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করালো) এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হল। ’
৩০৮৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবূ তালহা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ঘরে কুকুর এবং প্রাণীর ছবি থাকে ঘরে ফিরিশতাগণ প্রবেশ করে না। ’
৩০৮৯। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। ’
৩০৯০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যাক্তি কুকুর রাখবে প্রতিদিন তার আমল নামা ততে এক ক্বীরাত করে সাওয়াব কমতে থাকবে। তবে কৃষিখামার অথবা পশুর পাল রক্ষার কাজে নিয়োজিত শিকারী কুকুর এর ব্যতীক্রম।
Comments
Post a Comment